নফল সালাত এর ফজিলত
যে সমস্ত সালাত পড়া বাধ্যতামূলক নয়, অর্থাৎ ফরয সালাত ব্যতীত যে সমস্ত সালাত ত্যাগ করলে গুনাহ হয় না কিন্তু পড়লে সওয়াব হয় সেই সমস্ত ছালত গূলোকে নফল ছলাত বলা হয়। নফল সালাত এর অনেক ফযিলত রয়েছে-
রসূল (সাঃ) বলেন, “কিয়ামতের দিন বান্দার নিকট থেকে তার আমলসমূহের মধ্যে যে আমলের হিসাব সর্বাগ্রে নেওয়া হবে, তা হল সালাত। সালাত ঠিক হলে সে পরিত্রাণ ও সফলতা লাভ করবে। নচেৎ (সালাত ঠিক না হলে) ধ্বংস ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সুতরাং (হিসাবের সময়) ফরয সালাতে কোন কমতি দেখা গেলে আল্লাহ তাবারাকা অতাআলা ফিরিশ্তাদের উদ্দেশ্যে বলবেন, ‘দেখ, আমার বান্দার কোন নফল (সালাত) আছে কি না।’ অতএব তার নফল সালাত দ্বারা ফরয সালাতের ঘাটতি পূরণ করা হবে। অতঃপর আরো সকল আমলের হিসাব অনুরুপ গ্রহণ করা হবে।” (আবূদাঊদ, তিরমিযী)
প্রতিদিনের ১২ রাকাত সুন্নাত সালাত
রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) ফরয সালাতের পূর্বে এবং পরে অতিরিক্ত সালাত আদায় করেছেন এবং উম্মাতদেরকে সালাত আদায় করার জন্য উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত করেছেন। যেমন তিনি (সাঃ) বলেছেন-
উম্মু হাবীবাহ্ (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি দিন রাতে বারো রাক্‘আত সলাত আদায় করবে তার জন্যে জান্নাতে একটি ঘর তৈরি করা হবে। (সে বারো রাক্‘আত সলাত হলো) চার রাক্‘আত যুহরের ফরযের পূর্বে আর দু’ রাক্‘আত যুহরের (ফরযের) পরে, দু’ রাক্‘আত মাগরিবের (ফরয সলাতের) পরে। দু’ রাক্‘আত ‘ইশার ফরয সলাতের পরে। আর দু’ রাক্‘আত ফজরের (ফরয সলাতের) পূর্বে। (তিরমিযী)
মুসলিমের এক বর্ণনায় শব্দ হলো উম্মু হাবীবাহ্ বলেছেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, যে মুসলিম প্রতিদিন আল্লাহ তা‘আলার ফরয সালাত ব্যতীত বারো রাক্‘আত সুন্নাত সালাত আদায় করবে। আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর বানাবেন। অথবা বলেছেন, জান্নাতে তার জন্যে একটি ঘর বানানো হবে।
ফজরের পূর্বে দুই রাকআত সুন্নত
অন্যান্য সুন্নাত সালাতের চাইতে ফজররে দুই রাকাত সুন্নাত সালাত অধিক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেন, “ফজরের দুই রাকআত (সুন্নত) পৃথিবী ও তন্মধ্যস্থিত সকল বস্তু অপেক্ষা উত্তম।” (মুসলিম , তিরমিযী)
এই সালাত ছুটে গেলে কাযা আদায় করতে হয়। উক্ত সালাত কাযা করার দুটি সময় হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।
১. ফজর এর ফরজ সালাতের পর। ফজরের পর কোন নফল পড়া নিষিদ্ধ হলেও ফজরের আগে ছুটে যাওয়া সুন্নতকে ফরযের পর পড়া যায়। একদা এক ব্যক্তি মসজিদে এসে দেখল আল্লাহর নবী (সাঃ) ফজরের ফরয পড়ছেন। সে সুন্নত না পড়ে জামাআতে শামিল হয়ে গেল। অতঃপর জামাআত শেষে উঠে ফজরের ছুটে যাওয়া দুই রাকআত সুন্নত আদায় করল। মহানবী (সাঃ) তার কাছে এসে বললেন, “এটি আবার কোন্ সালাত? ” লোকটি বলল, ‘ফজরের দুই রাকআত সুন্নত ছুটে গিয়েছিল।’ এ কথা শুনে তিনি আর কিছুই বললেন না (চুপ থাকলেন)। [ আহমাদ, মুসনাদ, আবূদাঊদ, তিরমিযী, সুনান ইবনে মাজাহ্ ]
২.সূর্য উদয় হওয়ার পর। এক হাদীসে মহানবী (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি ফজরের ২ রাকআত (সুন্নত) না পড়ে থাকে, সে যেন তা সূর্য ওঠার পর পড়ে নেয়।” [আহমাদ, মুসনাদ, তিরমিযী]
যোহরের সুন্নাত সালাত
রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) যোহরের ফরযের পূর্বের সুন্নাত সালাত কখনো ৪ রাকাত আবার কখনো ২ রাকাত আদায় করতেন।এবং ফরযের পরে ২ রাকাত আবার ৪ রাকাত সুন্নাত সালাত আদায় করতেন।
যোহরের ফরযের পূর্বে চার রাকাত এবং পরে ২ রাকাতের হাদিসঃ
আব্দুল্লাহ বিন শাকীক মা আয়েশা (রাঃ)কে আল্লাহর রসূল (সাঃ)-এর সুন্নত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে উত্তরে তিনি বললেন, ‘তিনি যোহরের আগে ৪ রাকআত এবং যোহরের পরে ২ রাকআত সালাত পড়তেন।’ (আহমাদ, মুসনাদ, মুসলিম, আবূদাঊদ, সুনান, মিশকাত )
আল্লাহর রসূল (সাঃ) বলেন, “যে কোন মুসলিম বান্দা প্রত্যহ্ আল্লাহ তাআলার উদ্দেশ্যে বারো রাকআত নফল (ফরয ব্যতীত সুন্নত) সালাত পড়লেই আল্লাহ তাআলা জান্নাতে তার জন্য এক গৃহ্ নির্মাণ করেন। অথবা তার জন্য জান্নাতে এক ঘর নির্মাণ করা হয়। (ঐ বারো রাকআত সালাত) যোহরের (ফরযের) পূর্বে চার রাকআত ও পরে দুই রাকআত, মাগরিবের পরে দুই রাকআত, এশার পরে দুই রাকআত, আর ফজরের (ফরয নামাযের) পূর্বে দুই রাকআত।” (মুসলিম, তিরমিযী, সুনান, মিশকাত)
যোহরের ফরযের পূর্বে দুই রাকাত ও পরে দুইরাকাত এর হাদিসঃ
ইবনে উমার (রাঃ) বলেন, ‘আমি নবী (সাঃ)-এর নিকট থেকে ১০ রাকআত সালাত স্মরণে রেখেছি, ২ রাকআত যোহরের পূর্বে, ২ রাকআত যোহরের পরে, ২ রাকআত মাগরিবের পরে নিজ ঘরে, ২ রাকআত ইশার পরে নিজ ঘরে এবং ২ রাকআত ফজরের ফরযের পূর্বে।’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত)
যোহরের ফরযের পূর্বে চার রাকাত ও পরে চার রাকাতের হাদিসঃ
হযরত উম্মেহাবীবা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (সাঃ) এর নিকট শুনেছি, তিনি বলেছেন, “যে ব্যক্তি যোহরের পূর্বে ৪ রাকআত এবং পরে ৪ রাকআত (সুন্নত সালাতের) প্রতি যত্নবান হবে, আল্লাহ তাকে জাহান্নামের জন্য হারাম করে দেবেন।” (আহমাদ, মুসনাদ, সুনানু আরবাআহ (আবূ দাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ ও ইবনে মাজাহ্)
যোহরের সুন্নাতের কাযাঃ
সুন্নত কাযা পড়া সুন্নত, জরুরী নয়। কারণবশত: যোহরের পূর্বের সুন্নত পড়তে না পারলে ফরযের (পরের সুন্নতের) পরে তা কাযা করা বিধেয়। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, ‘নবী (সাঃ) যোহরের পূর্বের ৪ রাকআত পড়তে না পারলে (ফরযের) পরে তা পড়ে নিতেন।’ (তিরমিযী)
একই ভাবে যোহরের পরের সুন্নত পড়তে সময় না পেয়ে যোহরের ওয়াক্ত অতিবাহিত হলেও আসরের পর তা কাযা পড়া যায়।
উম্মে সালামাহ্ (রাঃ) বলেন, ‘একদা আল্লাহর রসূল (সাঃ) যোহরের (ফরয) সালাত পড়লেন। এমন সময় কিছু (সাদকার) মাল এসে উপস্থিত হল। তিনি তা বন্টন করতে বসলেন। এরপর আসরের আযান হয়ে গেল। তিনি আসরের সালাত পড়লেন। তারপর আমার ঘরে ফিরে এলেন। সেদিন ছিল আমার (ঘরে তাঁর থাকার পালা)। তিনি এসে ২ রাকআত ছোট করে সালাত পড়লেন। আমরা বললাম, ‘এ ২ রাকআত কোন্ সালাত হে আল্লাহর রসূল? আপনি কি তা পড়তে আদিষ্ট হয়েছেন?’ তিনি বললেন, “না, আসলে এটা হল সেই ২ রাকআত সালাত, যা আমি যোহরের পর পড়ে থাকি। কিন্তু আজ এই মাল এসে গেলে তা বন্টন করতে ব্যস্ত হয়ে পড়লে আসরের আযান হয়ে যায়। ফলে ঐ সালাত আমার বাদ পড়ে যায়। আর তা ছেড়ে দিতেও আমি অপছন্দ করলাম।” (আহমাদ, মুসনাদ, বুখারী, মুসলিম, আবূদাঊদ, সুনান)
মাগরিবের পূর্বে নফল সলাত
মাগরিবের ফরয সালাতের পূর্বে ২ রাকাত নফল সালাত আদায় করার জন্য রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন। যেমন হাদিসে এসেছে
‘আবদুল্লাহ আল-মুযানী (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা মাগরিবের পূর্বে দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করো। তিনি দু’ বার এরূপ বললেন। অতঃপর বললেন, যার ইচ্ছা হয়। এ আশংকায় যে, লোকেরা হয়ত এটাকে সুন্নাত (বা স্থায়ী নিয়ম) বানিয়ে নিবে।[বুখারী]
সালাতুদ্ দোহা
‘শুরূক্ব’ অর্থ সূর্য উদিত হওয়া। ‘ইশরাক্ব’ অর্থ চমকিত হওয়া। ‘যোহা’ অর্থ সূর্য গরম হওয়া। এই ছালাত সূর্যোদয়ের পরপরই প্রথম প্রহরের শুরুতে পড়লে একে ‘ছালাতুল ইশরাক্ব’ বলা হয় এবং কিছু পরে দ্বিপ্রহরের পূর্বে পড়লে তাকে ‘ছালাতুয যোহা’ বলা হয়।
আনাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি ফজরের ছালাত জামা‘আতে পড়ে, অতঃপর সূর্য ওঠা পর্যন্ত আল্লাহর যিকরে বসে থাকে, অতঃপর দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করে, তার জন্য পূর্ণ একটি হজ্জ ও ওমরাহর নেকী হয়।[তিরমিযী , মিশকাত ]
বুরাইদা আসলামী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘মানুষের শরীরে ৩৬০টি জোড় রয়েছে। অতএব মানুষের কর্তব্য হ’ল প্রত্যেক জোড়ের জন্য একটি করে ছাদাক্বা করা। ছাহাবীগণ বললেন, কার শক্তি আছে এই কাজ করার, হে আল্লাহর নবী? তিনি বললেন, দোহা’ দু’রাক‘আত ছালাতই এর জন্য যথেষ্ট।[আবুদাঊদ, মুসলিম, মিশকাত]
সালাতুদ্ দোহা রাকা‘আত সংখ্যা ২, ৪, ৮, ১২ পর্যন্ত পাওয়া যায়। মক্কা বিজয়ের দিন দুপুরের পূর্বে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) হযরত আলী (রাঃ)-এর বোন উম্মে হানীর গৃহে খুবই সংক্ষিপ্তভাবে ৮ রাক‘আত পড়েছিলেন।[মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ,] প্রতি দু’রাক‘আত অন্তর সালাম ফিরাতে হয়।
সালাতুত্ তাওবাহ্
যে কোন বান্দা পাপ করে ফেললে উক্ত পাপ এর জন্য অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা প্রার্থনার জন্য বিশেষভাবে যে নফল সালাত আদায় করা হয়, তাকে ‘সালাতুত তাওবাহ’ বলা হয়। আবুবকর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, কোন লোক যদি গোনাহ করে। অতঃপর উঠে দাঁড়ায় ও পবিত্রতা অর্জন করে এবং দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করে। অতঃপর আল্লাহর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেন।[আবুদাঊদ, নাসাঈ, ইবনু মাজাহ]
তাহিয়্যাতুল মাসজিদ
তাহিয়্যাতুল মাসজিদ। মাসজিদে প্রবেশ করার পর বসার পূর্বেই পড়তে হয়। এই সালাত যে কোন সময় আদায় করা যায়। প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন, “তোমাদের মধ্যে যে কেউ যখন মাসজিদে প্রবেশ করবে, তখন সে যেন বসার পূর্বে ২ রাক্আত সালাত পড়ে নেয়।” অন্য এক বর্ণনায় আছে, “সে যেন ২ রাক্আত সালাত পড়ার পূর্বে না বসে।” (বুখারী, মুসলিম)
সালাতুল হাযত
বিশেষ কোন বৈধ চাহিদা পূরণের জন্য আল্লাহর উদ্দেশ্যে যে দু’রাক‘আত নফল সালাত আদায় করাকে , তাকে ‘ছালাতুল হাজত’ বলা হয়। তাই যে কোন প্রয়োজনে
অথবা সংকটে অথবা দুশ্চিন্তায় থাকলে দুই রাকাত সালাত আদায় করে আল্লাহ্ রব্বুল আলামীনের নিকট সাহায্য চাইতে হবে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) তাই করতেন।
হুযায়ফা (রাঃ) বলেন, كَانَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا حَزَبَهُ أَمْرٌ صَلَّى ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যখন কোন সংকটে পড়তেন, তখন সালাতে রত হ’তেন’।[আবুদাঊদ]
সালাতুল ইস্তিখারাহ্
সালতুল ইস্কোতিখারাহ্ অর্থাৎ কল্যাণ প্রার্থনার সালাত , মুবাহ্ অর্থাৎ বৈধ বিষয় বা কাজে (যেমন ব্যবসা, সফর, বিবাহের ব্যাপারে) ভালো মন্দ বুঝতে না পারলে, সিদ্ধান্ত নিতে সন্দীহান হলে আল্লাহর নিকট কল্যাণ প্রার্থনা করার জন্য দুই রাকআত নফল সালাত আদায় করে পড়ে নিম্নের দুআ পাঠ করা সুন্নত।
اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَسْتَخِيْرُكَ بِعِلْمِكَ وَأَسْتَقْدِرُكَ بِقُدْرَتِكَ وَأَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ الْعَظِيْمِ، فَإِنَّكَ تَقْدِرُ وَلاَ أَقْدِرُ وَتَعْلَمُ وَلاَ أَعْلَمُ وَأَنْتَ عَلاَّمُ الْغُيُوْبِ، اَللّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هذَا الأَمْرَ(–) خَيْرٌ لِيْ فِيْ دِيْنِيْ وَمَعَاشِيْ وَعَاقِبَةِ أَمْرِيْ وَعَاجِلِهِ آجِلِهِ فَاقْدُرْهُ لِيْ وَيَسِّرْهُ لِيْ ثُمَّ بَارِكْ لِيْ فِيْهِ، وَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هذَا الأَمْرَ شَرٌّ لِيْ فِيْ دِيْنِيْ وَمَعَاشِيْ وَعَاقِبَةِ أَمْرِيْ وَعَاجِلِهِ وَآجِلِهِ فَاصْرِفْهُ عَنِّيْ وَاصْرِفْنِيْ عَنْهُ وَاقْدُرْ لِىَ الْخَيْرَ حَيْثُ كَانَ ثُمَّ رَضِّنِيْ بِهِ
উচ্চারণ- “আল্লা-হুম্মা ইন্নী আস্তাখীরুকা বিইলমিকা অ আস্তাক্বদিরুকা বি ক্বুদরাতিকা অ আসআলুকা মিন ফাদ্লিকাল আযীম, ফাইন্নাকা তাক্বদিরু অলা আক্বদিরু অতা’লামু অলা আ’লামু অ আন্তা আল্লা-মুল গুয়ূব। আল্লা-হুম্মা ইন কুন্তা তা’লামু আন্নাহা-যাল আমরা (—-) খাইরুল লী ফী দ্বীনী অ মাআ’শী অ আ’-ক্বিবাতি আমরী অ আ’-জিলিহী অ আ-জিলিহ, ফাক্বদুরহু লী, অ য়্যাসসিরহু লী, সুম্মা বা-রিক লী ফীহ্। অইন কুন্তা তা’লামু আন্নাহা-যাল আমরা শারুল লী ফী দ্বীনী অ মাআ’শী অ আ’-কিবাতি আমরী অ আ’-জিলিহী অ আ-জিলিহ্, ফাস্বরিফহু আ ন্নী অস্বরিফনী আনহু, অক্বদুর লিয়াল খাইরাহাইসু কা-না সুম্মা রায্বযিনী বিহ্।
অর্থ- হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি তোমার নিকট তোমার ইলমের সাথে মঙ্গল প্রার্থনা করছি। তোমার কুদরতের সাথে শক্তি প্রার্থনা করছি এবং তোমার বিরাট অনুগ্রহ থেকে ভিক্ষা যাচনা করছি। কেননা, তুমি শক্তি রাখ, আমি শক্তি রাখি না। তুমি জান, আমি জানি না এবং তুমি অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা। হে আল্লাহ! যদি তুমি এই (—) কাজ আমার জন্য আমার দ্বীন, দুনিয়া, জীবন এবং কাজের বিলম্বিত ও অবিলম্বিত পরিণামে ভালো জান, তাহলে তা আমার জন্য নির্ধারিত ও সহ্জ করে দাও। অতঃপর তাতে আমার জন্য বর্কত দান কর। আর যদি তুমি এই কাজ আমার জন্য আমার দ্বীন, দুনিয়া, জীবন এবং কাজের বিলম্বিত ও অবিলম্বিত পরিণামে মন্দ জান, তাহলে তা আমার নিকট থেকে ফিরিয়ে নাও এবং আমাকে ওর নিকট থেকে সরিয়ে দাও। আর যেখানেই হোক মঙ্গল আমার জন্য বাস্তবায়িত কর, অতঃপর তাতে আমার মনকে পরিতুষ্ট করে দাও।
প্রথমে هذا الأمر ‘হা-যাল আমরা’ এর স্থলে বা পরে কাজের নাম নিতে হবে অথবা মনে মনে সেই জ্ঞাতব্য বিষয়ের প্রতি ইঙ্গিত করতে হবে।
মহানবী (সাঃ) এই দুআ সাহাবীগণকে শিখাতেন, যেমন কুরআনের সূরা শিখাতেন। আর এখান থেকেই ছোট-বড় সকল কাজেই ইস্তিখারার গুরুত্ব প্রকাশ পায়।
সে ব্যক্তি কর্মে কোনদিন লাঞ্জিত হয় না যে আল্লাহর নিকট তাতে মঙ্গল প্রার্থনা করে, অভিজ্ঞদের নিকট পরামর্শ গ্রহণ করে এবং ভালো-মন্দ বিচার করার পর কর্ম করে। (বুখারী, আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, আহমাদ, মুসনাদ ৩ /৩৪৪)
এই সালাত দিনে ও রাতে হারাম ওয়াক্ত ব্যাতীত যেকোন সময় পড়া যায়।এই সালাত নিজেই আদায় করতে হয়।অন্যদের দ্বারা আদায় করলে আদায় হবে না।