জিলহজ মাসে আমাদের করণীয়-
এক.
এই দশ দিনের যে কোনো আমল, সেটা নফল নামায-রোযা হোক বা যিকির-তাহাজ্জুদ, তা আল্লাহর নিকট খুবই প্রিয় ও অতি পছন্দনীয়। তাই যে কোনো নফল ইবাদত যেমন, নামায-রোযা, যিকির-তাহাজুতদ, দান-খয়রাত ইত্যাদি এই দশ দিনে করা হলে তার ফযীলত ও মর্যাদা বছরের অন্য যে কোনো সময়ে করার চেয়ে অনেক বেশি পাওয়া যাবে।
ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা:) বলেছেন, জিলহজের ১০ দিনের ইবাদত আল্লাহ তাআলার কাছে অন্য যেকোনো দিনের ইবাদতের থেকে অধিকতর প্রিয়। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আল্লাহর পথে জিহাদও কি নয়?’ তিনি উত্তরে বললেন, ‘না, আল্লাহর পথে জিহাদও নয়। তবে হ্যাঁ, যে ব্যক্তি নিজের জান-মাল নিয়ে বেরিয়েছে, তারপর ওগুলোর কিছুই নিয়ে ফিরেনি (তার কথা স্বতন্ত্র)।’ ( আবু দাউদ – ২৪৩৮ )
হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দিনগুলোতে রোযা রাখতেন। ( সুনানে আবু দাউদ – ২৪৩৭; মুসনাদে আহমদ – ২৫৯২০; সুনানে নাসায়ী – ২৪১৬ )
দুই.
জিলহজ মাসের ৯ তারিখ তথা আরাফার দিন রোজা রাখা। স্বয়ং আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দিনে গুরুত্বসহকারে রোজা রাখতেন। ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৯ জিলহজ্জ এবং আশুরার দিন রোজা রাখতেন।’ ( আবু দাউদ – ২৪৩৭ )
আবু কাতাদা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আরাফার দিনের রোজার ব্যাপারে আমি আশাকরি যে, আল্লাহ তাআলা এর দ্বারা পূর্ববর্তী এক বছরের ও পরবর্তী এক বছরের গুনাহ মাফ করে দিবেন। ( মুসলিম – ১১৬২ )
আরাফার দিন আল্লাহ তাআলা অন্যান্য দিনের তুলনায় অধিক সংখ্যক বান্দাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করেন। নিশ্চয়ই তিনি নিকটবর্তী হন এবং ফেরেশতাদের সামনে এদেরকে নিয়ে গর্ব করেন এবং বলেন, এরা কী চায় ? ( মুসলিম – ১৩৪৮ )
তিন.
এই দশদিন বেশি বেশি জিকির-আজকার করা। বেশি বেশি কালিমায়ে তাইয়্যাবা, আল হামদুলিল্লাহ ও আল্লাহু আকবার পড়া। কুরআন মাজীদে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, তিনি তাহাদেরকে চতুষ্পদ জন্তু হইতে যাহা রিযিক হিসাবে দান করিয়াছেন উহার উপর নিদির্ষ্ট দিনগুলিতে আল্লাহ নাম উচ্চারণ করিতে পারে।’ ( সূরা হজ – ২৮ )
চার.
প্রত্যেক মুসল্লীর জন্য জিলহজের ৯ তারিখের ফজর হতে ১৩ তারিখের আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরয নামায আদায় করে সালাম ফিরানোর সাথে সাথে উচ্চস্বরে একবার তাকবীরে তাশরীক বলা ওয়াজিব।
আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, ওয়াল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ
ফরজ নামাজ জামাতের সাথে পড়া হোক অথবা একাকী, আদা হোক বা কাযা, পুরুষ হোক বা নারী, মুকিম হোক বা মুসাফির সকলের উপরে এই তাকবীরে তাশরীক পড়া ওয়াজিব। ( আদ্দুররুল মুখতার – ৩/১৭৭-১৭৮ )
Leave a Comment
You must be logged in to post a comment.