★ ২৬তম ছওম এর তারাবীহ ছলাত ★
[শবে ক্বদরের সম্ভাবনাময় শেষ দশকের একটি রাত]
আজ শুক্রবার দিবাগত রাতে ২৬তম ছওম এর তারাবীহ ছলাতে পবিত্র কোরআনের ২৯তম পারা তেলাওয়াত করা হবে।
২৯তম পারা (সুরা মুলকের ১নং আয়াত থেকে সুরা মুরসালাতের ৫০নং আয়াত পর্যন্ত) থেকে সংক্ষেপে কিছু অংশ তুলে ধরা হল:-
১। তিনি সপ্ত আকাশ স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন। তুমি করুণাময় আল্লাহ তা’আলার সৃষ্টিতে কোন খুঁত দেখতে পাবে না। আবার দৃষ্টি ফেরাও; কোন ত্রুটি দেখতে পাও কি? [ সুরা মুলক-৩ ]
২। অতঃপর তুমি বার বার তাকিয়ে দেখ, তোমার দৃষ্টি ব্যর্থ ও পরিশ্রান্ত হয়ে তোমার দিকে ফিরে আসবে। [ সুরা মুলক-৪ ]
৩। নিশ্চয় যারা তাদের পালনকর্তাকে না দেখে ভয় করে, তাদের জন্যে রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার। [ সুরা মুলক-১২ ]
৪। মুত্তাকীদের জন্যে তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে ভোগ বিলাসবহুল জান্নাত। [ সুরা কালাম-৩৪ ]
৫। যখন শিংগায় ফুৎকার দেয়া হবে, একটি মাত্র ফুৎকার; এবং পৃথিবী ও পর্বতমালা উত্তোলিত হবে ও চুর্ণ-বিচুর্ণ করে দেয়া হবে, সেদিন কেয়ামত সংঘটিত হবে। সেদিন আকাশ বিদীর্ণ হবে ও বিক্ষিপ্ত হবে। এবং ফেরেশতাগণ আকাশের প্রান্তদেশে থাকবে ও আট জন ফেরেশতা আপনার পালনকর্তার আরশকে তাদের উর্ধ্বে ধারন করবে। সেদিন তোমাদেরকে উপস্থিত করা হবে। তোমাদের কোন কিছু গোপন থাকবে না। [ সুরা হাক্বকাহ-১৩-১৮ ]
৬। ফেরেশতাদেরকে বলা হবেঃ ধর ওকে গলায় বেড়ি পড়িয়ে দাও, অতঃপর নিক্ষেপ কর জাহান্নামে। অতঃপর তাকে শৃঙ্খলিত কর সত্তর হাত দীর্ঘ এক শিকলে। নিশ্চয় সে মহান আল্লাহতে বিশ্বাসী ছিল না।এবং মিসকীনকে আহার্য দিতে উৎসাহিত করত না। অতএব, আজকের দিন এখানে তার কোন সুহূদ নাই। এবং কোন খাদ্য নাই, ক্ষত-নিঃসৃত পুঁজ ব্যতীত। গোনাহগার ব্যতীত কেউ এটা খাবে না। [ সুরা হাক্বকাহ-৩০-৩৭ ]
৭। সেদিন আকাশ হবে গলিত তামার মত। এবং পর্বতসমূহ হবে রঙ্গীন পশমের মত, বন্ধু বন্ধুর খবর নিবে না। যদিও একে অপরকে দেখতে পাবে। সেদিন গোনাহগার ব্যক্তি পনস্বরূপ দিতে চাইবে তার সন্তান-সন্ততিকে, তার স্ত্রীকে, তার ভ্রাতাকে, তার গোষ্ঠীকে, যারা তাকে আশ্রয় দিত, এবং পৃথিবীর সবকিছুকে; অতঃপর নিজেকে রক্ষা করতে চাইবে। কখনই নয়। নিশ্চয় এটা লেলিহান অগ্নি।যা চামড়া তুলে দিবে। [ সুরা মা’য়ারিজ-৮-১৬ ]
৮। তোমরা কি লক্ষ্য কর না যে, আল্লাহ কিভাবে সপ্ত আকাশ স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন। এবং সেখানে চন্দ্রকে রেখেছেন আলোরূপে এবং সূর্যকে রেখেছেন প্রদীপরূপে। [ সুরা নূহ-১৫,১৬ ]
৯। তিনি অদৃশ্যের জ্ঞানী। তিনি অদৃশ্য বিষয় কারও কাছে প্রকাশ করেন না। তাঁর মনোনীত রসূল ব্যতীত। [ সুরা জ্বীন-২৬,২৭ ]
১০। আপনার পালনকর্তা জানেন, আপনি এবাদতের জন্যে দন্ডায়মান হন রাত্রির প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ, অর্ধাংশ ও এক-তৃতীয়াংশ, এবং আপনার সঙ্গীদের একটি দলও দন্ডায়মান হয়। আল্লাহ দিবা ও রাত্রি পরিমাপ করেন। তিনি জানেন, তোমরা এর পূর্ণ হিসাব রাখতে পার না। অতএব তিনি তোমাদের প্রতি ক্ষমা পরায়ন হয়েছেন। কাজেই কোরআনের যতটুকু তোমাদের জন্যে সহজ, ততটুকু আবৃত্তি কর। তিনি জানেন তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ অসুস্থ হবে, কেউ কেউ আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধানে দেশে-বিদেশে যাবে এবং কেউ কেউ আল্লাহর পথে জেহাদে লিপ্ত হবে। কাজেই কোরআনের যতটুকু তোমাদের জন্যে সহজ ততটুকু আবৃত্তি কর। তোমরা নামায কায়েম কর, যাকাত দাও এবং আল্লাহকে উত্তম ঋণ দাও। তোমরা নিজেদের জন্যে যা কিছু অগ্রে পাঠাবে, তা আল্লাহর কাছে উত্তম আকারে এবং পুরস্কার হিসেবে বর্ধিতরূপে পাবে। তোমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা কর। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু। [ সুরা মুযযাম্মিল-২০ ]
১১। অপরাধীদের সম্পর্কে বলা হবেঃ তোমাদেরকে কিসে জাহান্নামে নীত করেছে? তারা বলবেঃ আমরা নামায পড়তাম না, অভাবগ্রস্তকে আহার্য্য দিতাম না, আমরা সমালোচকদের সাথে সমালোচনা করতাম। এবং আমরা প্রতিফল দিবসকে অস্বীকার করতাম। আমাদের নিকট মৃত্যুর আগমন পর্যন্ত। [ সুরা মুদ্দাসসির-৪১-৪৭ ]
১২। মানুষ কি মনে করে যে, তাকে এমনি ছেড়ে দেয়া হবে? সে কি স্খলিত বীর্য ছিল না? অতঃপর সে ছিল রক্তপিন্ড, অতঃপর আল্লাহ তাকে সৃষ্টি করেছেন এবং সুবিন্যস্ত করেছেন। অতঃপর তা থেকে সৃষ্টি করেছেন যুগল নর ও নারী। তবুও কি সেই আল্লাহ মৃতদেরকে জীবিত করতে সক্ষম নন? [ সুরা কিয়ামা’হ- ৩৬-৪০ ]
১৩। তারা আল্লাহর প্রেমে অভাবগ্রস্ত, এতীম ও বন্দীকে আহার্য দান করে। তারা বলেঃ কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে আমরা তোমাদেরকে আহার্য দান করি এবং তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান ও কৃতজ্ঞতা কামনা করি না। আমরা আমাদের পালনকর্তার তরফ থেকে এক ভীতিপ্রদ ভয়ংকর দিনের ভয় রাখি। অতঃপর আল্লাহ তাদেরকে সেদিনের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করবেন এবং তাদেরকে দিবেন সজীবতা ও আনন্দ। এবং তাদের সবরের প্রতিদানে তাদেরকে দিবেন জান্নাত ও রেশমী পোশাক। [ সুরা দা’হর-৮-১২ ]
১৪। সেদিন মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে। এটা এমন দিন, যেদিন কেউ কথা বলবে না।এবং কাউকে তওবা করার অনুমতি দেয়া হবে না। [ সুরা মুরসালাত-৩৪-৩৬ ]
(সংগ্রীহিত : এস এম হাফিজুর রহমান নিক্সন / শাহরিয়ার কবির)