★ ২৫তম ছওম এর তারাবীহ ★
[অধিক সম্ভাবনার বেজোড় রাতের অন্যতম একটি রাত]
আজ ২৪ তম রমাদান, ১৪৪৫ হিজরি, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এশার ছলাতের পর তারাবীহ ছলাতে পবিত্র কোরআনের ২৮তম পারা তেলাওয়াত করা হবে।
২৮তম পারা (সুরা মুজাদালাহর ১নং আয়াত থেকে সুরা তাহরীমের ১২নং আয়াত পর্যন্ত) থেকে সংক্ষেপে কিছু অংশ তুলে ধরা হলো :-
১। আপনি কি অনুধাবন করেননি যে, নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, আল্লাহ তা জানেন? তিন ব্যক্তির মধ্যে এমন কোন গোপন পরামর্শ হয় না যাতে তিনি চতুর্থ হিসাবে উপস্থিত না থাকেন; এবং পাঁচ ব্যক্তির মধ্যে এমন কোন গোপন পরামর্শ হয় না যাতে তিনি ষষ্ঠ হিসাবে উপস্থিত না থাকেন; তারা এতদপেক্ষা কম হোক বা বেশী হোক, তারা যেখানেই থাকুক না কেন, তিনি তাদের সাথে আছেন। তারা যা করে, তিনি কেয়ামতের দিন তা তাদেরকে জানিয়ে দিবেন। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক অবহিত। [ সুরা মুজাদালাহ-৭ ]
২। আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী এমন সম্প্রদায় আপনি পাবেন না যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধাচারীদের ভালোবাসে; হোক না এই বিরুদ্ধাচারীরা তাদের পিতা, পুত্র, ভ্রাতা অথবা জ্ঞাতি-গোষ্ঠী। তাদের অন্তরে আল্লাহ ঈমান লিখে দিয়েছেন এবং তাদেরকে শক্তিশালী করেছেন তাঁর অদৃশ্য শক্তি দ্বারা। তিনি তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত। তারা তথায় চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। তারাই আল্লাহর দল। জেনে রাখ, আল্লাহর দলই সফলকাম হবে। [ সুরা মুজাদালাহ-২২ ]
৩। তাদের তুলনা হচ্ছে শয়তানের মত, যে মানুষকে কাফের হতে বলে। অতঃপর যখন সে কাফের হয়, তখন শয়তান বলেঃ তোমার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। আমি বিশ্বপালনকর্তা আল্লাহ তা’আলাকে ভয় করি। ফলে উভয়ের পরিনাম হবে জাহান্নাম এবং চিরকাল তথায় বসবাস করবে। এটাই জালেমদের কর্মফল। [ সুরা হাশর-১৬,১৭ ]
৪। মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহ তা’আলাকে ভয় কর। প্রত্যেক ব্যক্তির উচিত, আগামীকালের জন্যে সে কি প্রেরণ করে, তা চিন্তা করা। আল্লাহ তা’আলাকে ভয় কর। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা’আলা সে সম্পর্কে খবর রাখেন। [ সুরা হাশর-১৮ ]
৫। যদি আমি এই কোরআন পাহাড়ের উপর অবতীর্ণ করতাম, তবে তুমি দেখতে যে, পাহাড় বিনীত হয়ে আল্লাহ তা’আলার ভয়ে বিদীর্ণ হয়ে গেছে। আমি এসব দৃষ্টান্ত মানুষের জন্যে বর্ণনা করি, যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে। [ সুরা হাশর-২১ ]
৬। তোমাদের আত্মীয়-স্বজন ও সন্তান-সন্ততি কিয়ামতের দিন কোন উপকারে আসবে না। তিনি তোমাদের মধ্যে ফয়সালা করবেন। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা দেখেন। [ সুরা মুমতাহিনা-৩ ]
৭। ধর্মের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদেরকে দেশ থেকে বহিস্কৃত করেনি, তাদের প্রতি সদাচরণ ও ইনসাফ করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। নিশ্চয় আল্লাহ ইনসাফকারীদেরকে ভালবাসেন। [ সুরা মুমতাহিনা-৮ ]
৮। আল্লাহ কেবল তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেন, যারা ধর্মের ব্যাপারে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে, তোমাদেরকে দেশ থেকে বহিস্কৃত করেছে এবং বহিস্কারকার্যে সহায়তা করেছে। যারা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করে তারাইতো জালেম। [ সুরা মুমতাহিনা-৯ ]
৯। মুমিনগণ, আল্লাহ যে জাতির প্রতি রুষ্ট, তোমরা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করো না। তারা পরকাল সম্পর্কে নিরাশ হয়ে গেছে, যেমন কাফেররা নিরাশ হয়ে গেছে সমাধিস্থদের বিষয়ে। [ সুরা মুমতাহিনা-১৩ ]
১০। মুমিনগণ, তোমরা যা কর না, তা কেন বল?
তোমরা যা কর না, তা বলা আল্লাহর দৃষ্টিতে খুবই অসন্তোষজনক। [ সুরা সফ-২,৩ ]
১১। যারা আল্লাহর পথে লড়াই করে সারিবদ্ধভাবে সীসাগালানো প্রাচীরের মত, আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন। [ সুরা সফ-৪ ]
১২। স্মরণ কর, যখন মরিয়ম-তনয় ঈসা বললঃ হে বনী ইসরাইল! আমি তোমাদের কাছে আল্লাহর প্রেরিত রসূল, আমার পূর্ববর্তী তওরাতের আমি সত্যায়নকারী এবং আমি এমন একজন রসূলের সুসংবাদদাতা, যিনি আমার পরে আগমন করবেন। তাঁর নাম আহমদ। অতঃপর যখন সে স্পষ্ট প্রমাণাদি নিয়ে আগমন করল, তখন তারা বললঃ এ তো এক প্রকাশ্য যাদু। [ সুরা সফ-৬ ]
১৩। তারা মুখের ফুঁৎকারে আল্লাহর নূর নিভিয়ে দিতে চায়। আল্লাহ তাঁর নূরকে পূর্ণরূপে বিকশিত করবেন, যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে। [ সুরা সফ-৮ ]
১৪। মুমিনগণ, আমি কি তোমাদেরকে এমন এক বানিজ্যের সন্ধান দিব, যা তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে মুক্তি দেবে? তা এই যে, তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে এবং আল্লাহর পথে নিজেদের ধন-সম্পদ ও জীবনপণ করে জেহাদ করবে। এটাই তোমাদের জন্যে উত্তম; যদি তোমরা বোঝ। [ সুরা সফ-১০,১১ ]
১৫। মুমিনগণ, জুমআর দিনে যখন নামাযের আযান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম, যদি তোমরা বুঝ। [ সুরা জুম’য়া-৯ ]
১৬। অতঃপর নামায সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ কর; ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। [ সুরা জুম’য়া-১০ ]
১৭। মুমিনগণ, তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল না করে। যারা এ কারণে গাফেল হয়, তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত। [ সুরা মুনাফিক্বুন-৯ ]
১৮। আমি তোমাদেরকে যে রিজিক দিয়েছি, তা থেকে মৃত্যু আসার আগেই ব্যয় কর। অন্যথায় সে বলবেঃ হে আমার পালনকর্তা, আমাকে আরও কিছুকাল অবকাশ দিলে না কেন? তাহলে আমি সাদকাহ করতাম এবং সৎ কর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত হতাম। [ সুরা মুনাফিক্বুন-১০ ]
১৯। প্রত্যেক ব্যক্তির নির্ধারিত সময় যখন উপস্থিত হবে, তখন আল্লাহ কাউকে অবকাশ দেবেন না। তোমরা যা কর, আল্লাহ সে বিষয়ে খবর রাখেন। [ সুরা মুনাফিক্বুন-১১ ]
২০। আল্লাহর নির্দেশ ব্যতিরেকে কোন বিপদ আসে না এবং যে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস করে, তিনি তার অন্তরকে সৎপথ প্রদর্শন করেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক অবহিত। [ সুরা তাগাবুন-১১ ]
২১। তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তো কেবল পরীক্ষা। আর আল্লাহর কাছে রয়েছে মহাপুরস্কার। [ সুরা তাগাবুন-১৫ ]
২২। তোমরা যখন স্ত্রীদেরকে তালাক দিতে চাও, তখন তাদেরকে তালাক দিয়ো ইদ্দতের প্রতি লক্ষ্য রেখে, এবং ইদ্দত গণনা করে, এবং তোমাদের পালনকর্তা আল্লাহকে ভয় করে। তোমরা তাদেরকে তাদের গৃহ থেকে বহিস্কার করো না এবং তারাও যেন বের না হয়; যদি না তারা কোন সুস্পষ্ট নির্লজ্জ কাজে লিপ্ত হয়। এগুলো আল্লাহর নির্ধারিত সীমা। যে ব্যক্তি আল্লাহর সীমালংঘন করে, সে নিজেরই অনিষ্ট করে। সে জানে না, হয়তো আল্লাহ এই তালাকের পর কোন নতুন উপায় করে দেবেন। [ সুরা তালাক-১ ]
২৩। অতঃপর তাদের ইদ্দতকাল পূরন হলে, হয় তাদেরকে যথোপযুক্ত পন্থায় রেখে দেবে অথবা যথোপযুক্ত পন্থায় ছেড়ে দেবে; এবং তোমাদের মধ্য থেকে দু’জন নির্ভরযোগ্য লোককে সাক্ষী রাখবে। তোমরা আল্লাহর জন্য সঠিক সাক্ষ্য দিও। এতদ্দ্বারা যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে, তাকে উপদেশ দেয়া হচ্ছে। আর যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্যে নিস্কৃতির ব্যবস্থা করে দেবেন। [ সুরা তালাক-২ ]
২৪। তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যাদের ঋতুবর্তী হওয়ার আশা নেই, তাদের ব্যাপারে সন্দেহ হলে তাদের ইদ্দত হবে তিন মাস। আর যারা এখনও ঋতুর বয়সে পৌঁছেনি, তাদেরও অনুরূপ ইদ্দতকাল হবে। গর্ভবর্তী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তানপ্রসব পর্যন্ত। যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার সমস্যার সমাধান সহজ করে দিবেন। [ সুরা তালাক-৪ ]
২৫। মুমিনগণ, তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে সেই অগ্নি থেকে রক্ষা কর, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও প্রস্তর। যাতে নিয়োজিত আছে পাষাণ হৃদয়, কঠোরস্বভাব ফেরেশতাগণ। তারা আল্লাহ তা’আলা যা আদেশ করেন, তা অমান্য করে না এবং যা করতে আদেশ করা হয়, তাই করে। [ সুরা তাহরীম-৬ ]
২৬। মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহ তা’আলার কাছে তওবা কর, আন্তরিক তওবা। আশা করা যায়, তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের মন্দ কর্মসমূহ মোচন করে দেবেন এবং তোমাদেরকে দাখিল করবেন জান্নাতে, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত। সেদিন নবী এবং তাঁর বিশ্বাসী সহচরদেরকে আল্লাহ অপদস্থ করবেন না। তাদের নূর তাদের সামনে ও ডানদিকে ছুটোছুটি করবে। তারা বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের নূরকে পূর্ণতা দান করুন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন। নিশ্চয় আপনি সবকিছুর উপর সর্ব শক্তিমান। [ সুরা তাহরীম-৮ ]
(সংগ্রীহিত : এস এম হাফিজুর রহমান নিক্সন / শাহরিয়ার কবির)