★ ২৩তম ছওম এর তারাবীহ ★
[শবে ক্বদরের অধিকতম সম্ভাবনাময় বেজোড় রাত]
আজ ২২তম রমাদান, ১৪৪৫ হিজরি, মঙ্গলবার এশার ছলাতের ছলাতের পর ২৩তম ছওম এর (শবে ক্বদরের অধিকতম সম্ভাবনাময় বেজোড় রাতের অন্যতম একটি রাত) তারাবীহ ছলাতে পবিত্র কোরআনের ২৬তম পারা তেলাওয়াত করা হবে।
২৬তম পারা (সুরা আহক্বাফ এর ১নং আয়াত থেকে সুরা যারিয়া’ত এর ৩০ আয়াত পর্যন্ত) থেকে সংক্ষেপে কিছু অংশ তুলে ধরা হলো :-
১। যে ব্যক্তি আল্লাহর পরিবর্তে এমন বস্তুর পূজা করে, যে কেয়ামত পর্যন্তও তার ডাকে সাড়া দেবে না, তার চেয়ে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে? তারা তো তাদের পুজা সম্পর্কেও বেখবর। [সুরা আহক্বাফ-৫]
২। নিশ্চয় যারা বলে, আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ; অতঃপর অবিচল থাকে। তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিত হবে না। [সুরা আহক্বাফ-১৩]
৩। যেদিন কাফেরদেরকে জাহান্নামের কাছে উপস্থিত করা হবে সেদিন বলা হবে, তোমরা তোমাদের সুখ পার্থিব জীবনেই নিঃশেষ করেছ এবং সেগুলো ভোগ করেছ। সুতরাং আজ তোমাদেরকে অপমানকর আযাবের শাস্তি দেয়া হবে; কারণ, তোমরা পৃথিবীতে অন্যায় ভাবে অহংকার করতে এবং তোমরা ছিলে সত্যদ্রোহী। [সুরা আহক্বাফ-২০]
৪। আমি তাদের দিয়েছিলাম, কর্ণ, চক্ষু ও হৃদয়; কিন্তু তাদের কর্ণ, চক্ষু ও হৃদয় তাদের কোন কাজে আসল না। কেননা তারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অস্বীকার করত এবং তাদেরকে সেই শাস্তি গ্রাস করে নিল, যা নিয়ে তারা ঠাট্টা বিদ্রুপ করত। [সুরা আহক্বাফ-২৬]
৫। তোমরা আল্লাহর দিকে আহবানকারীর কথা মান্য কর এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর। তিনি তোমাদের গোনাহ মার্জনা করবেন এবং যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি থেকে তোমাদেরকে রক্ষা করবেন। [সুরা আহক্বাফ-৩১]
৬। যারা কুফরী করে এবং আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করে, আল্লাহ তাদের সকল কর্ম ব্যর্থ করে দেন। [সুরা মুহাম্মাদ-১]
৭। যারা আল্লাহর পথে শহীদ হয়, আল্লাহ কখনই তাদের কর্ম বিনষ্ট করবেন না। [সুরা মুহাম্মাদ-৪]
৮। আল্লাহ মুমিনদের অভিভাবক এবং কাফেরদের কোন অভিভাবক নাই। [সুরা মুহাম্মাদ-১১]
৯। পরহেযগারদেরকে যে জান্নাতের ওয়াদা দেয়া হয়েছে, তার অবস্থা নিম্নরূপঃ তাতে আছে পানির নহর, নির্মল দুধের নহর, যার স্বাদ অপরিবর্তনীয়, পানকারীদের জন্যে সুস্বাদু শরাবের নহর এবং পরিশোধিত মধুর নহর। তথায় তাদের জন্যে আছে রকমারি ফল-মূল ও আছে তাদের পালনকর্তার ক্ষমা। পরহেযগাররা কি তাদের সমান, যারা জাহান্নামে অনন্তকাল থাকবে এবং যাদেরকে পান করতে দেয়া হবে ফুটন্ত পানি, অতঃপর তা তাদের নাড়িভূঁড়ি ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে দেবে? [সুরা মুহাম্মাদ-১৫]
১০। যারা সৎপথ অবলম্বন করে আল্লাহ তাদের সৎপথে চলার শক্তি বৃদ্ধি করেন, এবং তাদেরকে মুত্তাকী হওয়ার শক্তি দান করেন। [সুরা মুহাম্মাদ-১৭]
১১। যখন কোন দ্ব্যর্থহীন সূরা নাযিল হয় এবং তাতে জেহাদের উল্লেখ করা হয়, তখন যাদের অন্তরে রোগ আছে, আপনি তাদেরকে মৃত্যুভয়ে মূর্ছাপ্রাপ্ত মানুষের মত আপনার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখবেন। সুতরাং ধ্বংস তাদের জন্যে। [সুরা মুহাম্মাদ-২০]
১২। তারা কি কোরআন সম্পর্কে গভীর চিন্তা করে না? না তাদের অন্তর তালাবদ্ধ? [সুরা মুহাম্মাদ-২৪]
১৩। হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর, রসূলের আনুগত্য কর এবং নিজেদের কর্ম বিনষ্ট করো না। [সুরা মুহাম্মাদ-৩৩]
১৪। অতএব, তোমরা হীনবল হয়ো না এবং সন্ধির প্রস্তাব করো না, তোমরাই হবে প্রবল। আল্লাহই তোমাদের সাথে আছেন। তিনি কখনও তোমাদের কর্মফল হ্রাস করবেন না। [সুরা মুহাম্মাদ-৩৫]
১৫। তোমরাই তো তারা, যাদেরকে আল্লাহর পথে ব্যয় করার আহবান জানানো হচ্ছে, অতঃপর তোমাদের কেউ কেউ কৃপণতা করছে। যারা কৃপণতা করছে, তারা নিজেদের প্রতিই কৃপণতা করছে। আল্লাহ অভাবমুক্ত এবং তোমরা অভাবগ্রস্থ। যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে তিনি তোমাদের পরিবর্তে অন্য জাতিকে প্রতিষ্ঠিত করবেন, এরপর তারা তোমাদের মত হবে না। [সুরা মুহাম্মাদ-৩৮]
১৬। তিনিই মুমিনদের অন্তরে প্রশান্তি নাযিল করেন, যাতে তাদের ঈমানের সাথে আরও ঈমান বেড়ে যায়। [সুরা ফাতাহ-৪]
১৭। আমি আপনাকে প্রেরণ করেছি স্বাক্ষী রূপে, সুসংবাদদাতা ও ভয় প্রদর্শনকারীরূপে। [সুরা ফাতাহ-৮]
১৮। নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই। তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন এবং যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম মেহেরবান। [সুরা ফাতাহ-১৪]
১৯। মুমিনগণ! যদি কোন পাপাচারী ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোন সংবাদ আনয়ন করে, তবে তোমরা পরীক্ষা করে দেখবে, যাতে অজ্ঞতাবশতঃ তোমরা কোন সম্প্রদায়ের ক্ষতিসাধনে প্রবৃত্ত না হও এবং পরে নিজেদের কৃতকর্মের জন্যে অনুতপ্ত না হও। [সুরা হুজুরাত-৬]
২০। যদি মুমিনদের দুই দল যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দিবে। অতঃপর যদি তাদের একদল অপর দলের উপর চড়াও হয়, তবে তোমরা আক্রমণকারী দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে। যদি ফিরে আসে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে ন্যায়ানুগ পন্থায় মীমাংসা করে দিবে এবং ইনসাফ করবে। নিশ্চয় আল্লাহ ইনসাফকারীদেরকে পছন্দ করেন। [সুরা হুজুরাত-৯]
২১। মুমিনরা তো পরস্পর ভাই-ভাই। অতএব, তোমরা তোমাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে মীমাংসা করবে এবং আল্লাহকে ভয় করবে, যাতে তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হও। [সুরা হুজুরাত-১০]
২২। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। কেউ ঈমান আনার পর তাদের মন্দ নামে ডাকা গোনাহ। যারা এহেন কাজ করা থেকে তওবা না করে তারাই যালেম। [সুরা হুজুরাত-১১]
২৩। মুমিনগণ, তোমরা অনেক ধারণা থেকে বেঁচে থাক। নিশ্চয় কতক ধারণা গোনাহ। এবং কারও গোপনীয় বিষয় অনুসন্ধান করো না। তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি তার মৃত ভাইয়ের মাংস খাওয়া পছন্দ করবে? বস্তুতঃ তোমরাতো একে ঘৃণাই মনে কর। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু। [সুরা হুজুরাত-১২]
২৪। নিশ্চয় আল্লাহর কাছে সে-ই সর্বাধিক মর্যাদাসম্পন্ন, যে সর্বাধিক পরহেযগার। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছুর খবর রাখেন। [সুরা হুজুরাত-১৩]
২৫। তারাই মুমিন, যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান আনার পর সন্দেহ পোষণ করে না এবং আল্লাহর পথে জীবন ও ধন-সম্পদ দ্বারা জেহাদ করে। তারাই সত্যনিষ্ঠ। [সুরা হুজুরাত-১৫]
২৬। আমি মানুষ সৃষ্টি করেছি এবং তার মন নিভৃতে তাকে যে কুমন্ত্রণা দেয়, সে সম্বন্ধেও আমি অবগত আছি। আমি তার গ্রীবাস্থিত ধমনী থেকেও অধিক নিকটবর্তী। [সুরা ক্বাফ-১৬]
২৭। দুই ফেরেশতা ডানে ও বামে বসে তার আমল লিপিবদ্ধ করে। সে যে কথাই উচ্চারণ করে, তাই গ্রহণ করার জন্যে তার কাছে সদা প্রস্তুত প্রহরী রয়েছে। [সুরা ক্বাফ-১৭-১৮]
২৮। যে আমার শাস্তিকে ভয় করে, তাকে কোরআনের সাহায্যে উপদেশ দান করুন। [সুরা ক্বাফ-৪৫]
২৯। সেদিন আল্লাহভীরুরা প্রস্রবণ বিশিষ্ট জান্নাতে থাকবে। এমতাবস্থায় যে, তারা গ্রহণ করবে যা তাদের পালনকর্তা তাদেরকে দেবেন। কারন পার্থিব জীবনে তারা ছিল সৎকর্মপরায়ণ; তারা রাত্রির সামান্য অংশেই নিদ্রা যেত, রাতের শেষ প্রহরে তারা ক্ষমাপ্রার্থনা করত, এবং তাদের ধন-সম্পদে অভাবগ্রস্ত ও বঞ্চিতের হক ছিল। [সুরা যারিয়া’ত-১৫-১৯]
(সংগ্রীহিত : এস এম হাফিজুর রহমান নিক্সন / শাহরিয়ার কবির)