★ ২১তম ছওম এর তারাবীহ ★
[শবে ক্বদরের অধিকতর সম্ভাবনাময় রাত]
আজ ২০তম রমাদান, ১৪৪৫ হিজরি, রবিবার এশার ছলাতের পর ২১তম ছওম এর শবে ক্বদরের সম্ভাবনাময় রাতে (অধিকতর সম্ভাবনার বেজোড় রাতের অন্যতম একটি রাত) তারাবীহ ছলাতে পবিত্র কোরআনের ২৪তম পারা তেলাওয়াত করা হবে।
২৪তম পারা (সুরা যুমার এর ৩২ আয়াত থেকে সুরা হা-মীম এর ৪৬ আয়াত পর্যন্ত) থেকে সংক্ষেপে কিছু অংশ তুলে ধরা হলো-
১। যারা সত্য নিয়ে আগমন করেছে এবং সত্যকে সত্য মেনে নিয়েছে; তারাই তো আল্লাহভীরু।তাদের জন্যে পালনকর্তার কাছে তাই রয়েছে, যা তারা চাইবে। এটা সৎকর্মীদের পুরস্কার। [সুরা যুমার-৩৩-৩৪]
২। আল্লাহ যাকে পথপ্রদর্শন করেন, তাকে পথভ্রষ্টকারী কেউ নেই। [সুরা যুমার-৩৭]
৩। আল্লাহ মানুষের প্রাণ হরণ করেন তার মৃত্যুর সময়, এবং যারা মরেনি তাদের প্রাণও নিদ্রার সময়। অতঃপর যার জন্য মৃত্যুর সিদ্ধান্ত করেন, তার প্রাণ তিনি রেখে দেন, এবং অন্যান্যদের ছেড়ে দেন এক নির্দিষ্ট সময়ের জন্যে। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে। [সুরা যুমার-৪২]
৪। যখন একক আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা হয়, তখন যারা পরকালে বিশ্বাস করে না, তাদের অন্তর বিতৃষ্ণায় সংকুচিত হয়ে যায়; আর যখন আল্লাহ ব্যতীত তাদের দেবতাদের নাম উচ্চারণ করা হয়, তখন তারা আনন্দে উল্লসিত হয়ে উঠে। [সুরা যুমার-৪৫]
৫। মানুষকে যখন দুঃখ-কষ্ট স্পর্শ করে, তখন সে আমাকে ডাকতে শুরু করে। এরপর আমি যখন তাকে আমার পক্ষ থেকে নেয়ামত দান করি, তখন সে বলে, এটা তো আমি আমার জ্ঞানের মাধ্যমে লাভ করেছি। অথচ এটা এক পরীক্ষা, কিন্তু তাদের অধিকাংশই বোঝে না। [সুরা যুমার-৪৯]
৬। হে আমার বান্দাগণ! তোমরা যারা নিজেদের উপর যুলুম করেছ, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গোনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। [সুরা যুমার-৫৩]
৭। আল্লাহ মুত্তাকীদের উদ্ধার করবেন তাদের সাফল্যসহ; তাদেরকে অনিষ্ট স্পর্শ করবে না এবং তারা চিন্তিতও হবে না। [সুরা যুমার-৬১]
৮। যখন শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে, আসমান ও যমীনে যারা আছে সবাই বেহুঁশ হয়ে যাবে, তবে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন তারা ব্যতীত। অতঃপর আবার শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে, তৎক্ষণাৎ তারা দন্ডায়মান হয়ে তাকাতে থাকবে। [সুরা যুমার-৬৮]
৯। পৃথিবী তার পালনকর্তার নূরে উদ্ভাসিত হবে, আমলনামা স্থাপন করা হবে, নবীগনকে ও সাক্ষীগণকে হাজির করা হবে এবং সকলের মধ্যে ন্যায়বিচার করা হবে ও তাদের প্রতি জুলুম করা হবে না। [সুরা যুমার-৬৯]
১০। কাফেরদেরকে জাহান্নামের দিকে দলে দলে হাঁকিয়ে নেয়া হবে। তারা যখন সেখানে পৌছাবে, তখন জাহান্নামের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হবে; এবং জাহান্নামের রক্ষীরা তাদেরকে বলবেঃ তোমাদের কাছে কি তোমাদের মধ্য থেকে কোন পয়গম্বর আসেনি, যারা তোমাদের কাছে তোমাদের পালনকর্তার আয়াতসমূহ আবৃত্তি করত এবং সতর্ক করত এ দিনের সাক্ষাতের ব্যাপারে? তারা বলবে, হ্যাঁ, অবশ্যই এসেছিল। বস্তুত কাফেরদের প্রতি শাস্তির হুকুমই বাস্তবায়িত হয়েছে। [সুরা যুমার-৭১]
১১। যারা তাদের পালনকর্তাকে ভয় করত তাদেরকে দলে দলে জান্নাতের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে। যখন তারা উম্মুক্ত দরজা দিয়ে জান্নাতে পৌছাবে এবং জান্নাতের রক্ষীরা তাদেরকে বলবেঃ তোমাদের প্রতি সালাম, তোমরা সুখে থাক, অতঃপর চিরস্থায়ীভাবে বসবাসের জন্যে তোমরা জান্নাতে প্রবেশ কর। [সুরা যুমার-৭৩]
১২। (আল্লাহ) যিনি পাপ ক্ষমা করেন এবং তওবা কবুল করেন; যিনি শাস্তিদানে কঠোর, শক্তিশালী। তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। প্রত্যাবর্তন তাঁরই নিকট। [সুরা মু’মিন-৩]
১৩। যারা আরশ বহন করে এবং যারা তার চতুস্পার্শ ঘিরে আছে, তারা তাদের পালনকর্তার সপ্রশংস পবিত্রতা বর্ণনা করে; তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং মুমিনদের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করে বলেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আপনার রহমত ও জ্ঞান সবকিছুতে পরিব্যাপ্ত। অতএব, যারা তওবা করে এবং আপনার পথ অবলম্বন করে চলে, আপনি তাদেরকে ক্ষমা করুন এবং জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করুন। [সুরা মু’মিন-৭]
১৪। তোমরা আল্লাহকে ডাক তাঁর আনুগত্যে একনিষ্ঠ হয়ে, যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে। [সুরা মু’মিন-১৪]
১৫। আপনি তাদেরকে আসন্ন দিন সম্পর্কে সতর্ক করুন, যখন দুঃখ কষ্টে তাদের প্রাণ কন্ঠাগত হবে, দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হবে। পাপিষ্ঠদের জন্যে কোন বন্ধু নেই এবং সুপারিশকারীও নেই; যার সুপারিশ গ্রাহ্য হবে। [সুরা মু’মিন-১৮]
১৬। যারা নিজেদের কাছে আগত কোন দলীল ছাড়াই আল্লাহর আয়াত সম্পর্কে বিতন্ডায় লিপ্ত হয়, তাদের একাজ আল্লাহ ও মুমিনদের দৃষ্টিতে অতিশয় ঘৃনাহ। এমনিভাবে আল্লাহ প্রত্যেক অহংকারী ও স্বৈরাচারী ব্যক্তির অন্তরে মোহর এঁটে দেন। [সুরা মু’মিন-৩৫]
১৭। পার্থিব জীবনতো কেবল অস্থায়ী উপভোগের বস্তু, আর পরকাল হচ্ছে চিরস্থায়ী বসবাসের গৃহ। [সুরা মু’মিন-৩৯]
১৮। তিনি চিরঞ্জীব, তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। অতএব, তোমরা তাঁকেই ডাক তাঁর এবাদতে একনিষ্ঠ হয়ে। সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজগতের পালনকর্তা আল্লাহর প্রাপ্য। [সুরা মু’মিন-৬৫]
১৯। তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করেনি এবং দেখেনি তাদের পূর্ববর্তীদের কি পরিণাম হয়েছিল? তারা তাদের চেয়ে সংখ্যায় বেশী এবং শক্তি ও কীর্তিতে অধিক প্রবল ছিল। অতঃপর তাদের কর্ম তাদেরকে কোন উপকার দেয়নি। [সুরা মু’মিন-৮২]
২০। নিশ্চয় যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তাদের জন্যে রয়েছে নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার। [সুরা হা-মীম-৮]
২১। আমি নিকটবর্তী আকাশকে প্রদীপমালা দ্বারা সুশোভিত ও সংরক্ষিত করেছি। এটা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহর ব্যবস্থাপনা। [সুরা হা-মীম-১২]
২২। ঐ ব্যক্তির কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার, যে আল্লাহর দিকে মানুষকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমিতো আত্মসমর্পণকারীদের অন্তর্ভুক্ত। [সুরা হা-মীম-৩৩]
২৩। এ গুণের অধিকারী করা হয় শুধু তাদেরকেই যারা ধৈর্য্যশীল; এবং এ গুণের অধিকারী করা হয় শুধু তাদেরকেই যারা মহা ভাগ্যবান। [সুরা হা-মীম-৩৫]
২৪। তোমরা সূর্যকে সেজদা করো না, চন্দ্রকেও না; সেজদা কর শুধু আল্লাহকে, যিনি এগুলো সৃষ্টি করেছেন, যদি তোমরা প্রকৃত তাঁরই এবাদত কর। [সুরা হা-মীম-৩৭]
২৫। আমি যদি আরবী ভাষায় কোরআন নাজিল না করতাম, তবে অবশ্যই তারা বলত, এর আয়াতসমূহ পরিস্কার ভাষায় বিবৃত করা হয়নি কেন? কি আশ্চর্য যে, এ কিতাবের ভাষা অনারবীয় এবং রসূল আরবী ভাষী! বলুন, এটা বিশ্বাসীদের জন্য হেদায়েত ও রোগের প্রতিকার। কিন্তু যারা অবিশ্বাসী তাদের কানে আছে বধিরতা, আর কোরআন তাদের জন্যে অন্ধত্ব। তাদেরকে যেন দূরবর্তী স্থান থেকে আহবান করা হয়। [সুরা হা-মীম-৪৪]
(সংগ্রীহিত : এস এম হাফিজুর রহমান নিক্সন / শাহরিয়ার কবির)